আগের পর্ব প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তৃতীয় পর্ব
এতক্ষন একজায়গায় দাঁড়িয়ে থাকায় শীত শীত লাগছে। আলোয়ানটা ভালো করে জড়িয়ে সামনের টিউবকলে মুখটা ভালো করে ধুয়ে নিলো। জলের ছোঁয়া লেগে আবার ঝরঝরে ভাবটা ফিরে এসেছে। কিন্তু ঠাণ্ডা লেগে পরপর বেশ কয়েকটা হাঁচিও দিলো সঙ্গে। মাথায় ছাগল চুরির ব্যাপারটা বিজবিজ করছে।কিন্তু তদন্ত করতে ইচ্ছে হলেও কান্নাকাটির মধ্যে কবিরাজ মশাইয়ের বাড়ি যেতে আর ইচ্ছে করল না তার। তার চেয়ে একটু ঘুরে গেলে পুরো গ্রামটা ঘুরে দেখা হয়ে যাবে। গ্রামের পশ্চিম সীমানায় মোক্ষদা বুড়ির ঘর। সেদিক দিয়ে যেতে যেতে বুড়ির চালাঘরটা চোখে পড়ল। টালির চালটা একেবারে সবুজ হয়ে আছে। সামনে একটা কামরাঙ্গা গাছ ছিল। ছোটবেলায় কত পেড়ে পেড়ে খেয়েছে। কৌতূহলে পায়ে পায়ে কাছে গেলো।লতানে শাক-সবজির বাহার। চালের ওপর বেশ কিছু চালকুমড়ো আর লাউ ফলে রয়েছে। উঠোনেও কত রকম গাছ,সবগুলোর নামও জানে না সে। একটা বাঁশের কঞ্চির খাঁচায় প্রচুর সিম ফলে রয়েছে। ভালো লাগছিল দেখতে। মোক্ষদাবুড়ি একাই থাকে। ছেলে যুবক হয়ে সেই যে বাষট্টির যুদ্ধে নাম লেখাতে গিয়েছিলো,আর ফেরে নি। তার কি হয়েছে সবাই বুঝলেও বুড়ি এখনো ছেলের আশায় বসে রয়েছে। কিভাবে এতো আশা জন্মায় কে জানে? অবলাকান্ত এসব ভাবতে ভাবতেই একটা মসৃণ লাউডগায় হাত বুলচ্ছিল। হঠাৎ কাঁধের ওপর একটা তীব্র যন্ত্রণায় ছিটকে পড়ে গেলো মাটিতে । লাঠি হাতে রণাঙ্গিনী মূর্তি নিয়ে মোক্ষদাবুড়িকে দেখে প্রায় হামাগুড়ি দেওয়ার উপক্রম। বুড়ির গলায় ফুল ফুটছে তখন।
ড্যাকরা ছোঁড়ার দল। হাড় গোড় সব জ্বালিয়ে খেলি। চ্যালা কাঠে ভূত পালায় । আজ দিচ্ছি তোদের মুড়ো গুঁড়ো করে…
অবলাকান্ত প্রায় মাটিতে শুয়ে কোনমতে হাত জোড় করে বলে
বুড়িমা আমি অবলা। তোমাদের অবলাকান্ত।
বুড়ির লাঠিটা আকাশে থেমে যায়। চোখ দুটো একটু পিটপিট করে দুটো ফোকলা দাঁত বেরিয়ে আসে। হাসতে দেখে স্বস্তি পায় অবলাকান্ত।
অ বাবা। এখন চোখে ভালো দেখিনা তো। তুই আমাদের কত্তার ছেলে অবলা না?
অবলাকান্ত মাথা নাড়ে। বুড়িকে দেখে মনে হল একটু আগের ঘটনাটা সে বেমালুম ভুলে গেছে।
এতো বড় দাওয়া থাকতে মাটিতে শুয়ে রয়েছিস কেন লা। তুই তো আমাদের নাতির মত। আয় দুটো নাড়ু খেয়ে যা বাপ।
অবাক হলেও “পেটে খেলে পিঠে সয়” কথাটা স্মরন করে সে বুড়ির পেছন পেছন গিয়ে দরজায় দাঁড়ায়।
খানিক পরে অবলাকান্ত আর মোক্ষদা বুড়িকে দেখা গেলো ঝকঝকে গোবর লেপা দাওয়ায় একখানা মাদুরের ওপর বসে থাকতে। এনামেলের বাটিতে খানিকটা মুড়ি নিয়ে সাথে কচকচ করে নাড়ু চেবাচ্ছে অবলাকান্ত আর বুড়ি ভারি খুশি হয়ে হাসিমুখে সে দৃশ্য দেখছে। গলায় আটকাতে চোঁ চোঁ করে এক গ্লাস জল সাবাড় করে অবলাকান্ত বলল
তারপর বুড়ি মা ?
সকালে উঠে দেখি তিন তিনটে কচি লাউ চালের থেকে কোন হারামজাদা তুলে নিয়ে গেছে।
দেখেছিলে কাউকে রাতে এদিকে আসতে যেতে ?
দেখেছি মানে? আমি তো রাত জেগেই থাকি। রাত বিরেতে নরেনটা এসে পড়লে চাট্টি ভাত ফুটিয়ে দিতে হবে না !
নরেন বুড়ির ছেলের নাম। অবলা একটু ধৈর্যহারা হয়।বলে
আরে দেখেছো কি কাউকে চুরি করতে?
আ মোলো। এই বয়েসে অত শত মনে থাকে নাকি ? তা দেখতাম বটে অন্ধকার হলেই একটা লম্বামত খাড়াচুলো ছেলেকে এদিকে ঘুরঘুর করতে। আজ তোকে দেখে ভাবলাম ওই ছোঁড়াটাই এসেছে বুঝি দল বেঁধে।
কাঁধে হাত বুলোতে বুলোতে অবলাকান্ত ভাবতে লাগলো। বুড়ির থেকে উত্তরের সঙ্গে আরও এক রাশ প্রশ্ন জোগাড় হল। লম্বামত আর খাড়া চুল বলতে তো এই গ্রামে কেষ্টা। কেষ্টা হল ক্লাবের ছেলেদের লিডার। একটা যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে যেন। মেলাতে চেষ্টা করল, একে একে দুই আর দুইয়ে দুইয়ে চার হয় কিনা। কবিরাজ মশাইয়ের বাড়ি থেকে ছাগলছানা আর মোক্ষদা বুড়ির বাড়ি থেকে লাউ চুরির অর্থ হল অদূর ভবিষ্যতে একটা ফিস্ট বা পিকনিক হতে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা সত্যি কিনা বোঝা যায় কি করে ? তুখোড় ভাবে মাথা খাটাতে লাগলো অবলাকান্ত। হাঁটতে হাঁটতে অন্যমনস্কভাবেই পকেটে রাখা কবিরাজ মশাইয়ের একখানা শেকড়ের টুকরো মুখে দিয়ে ফেলেছিল। সে এককালের জমিদারের বংশধর হলেও গ্রামেরই মানুষ। আর অসুস্থ থাকার দরুন ছোট থেকেই নিমপাতা বাটা থেকে শুরু করে অনেক পাঁচন তাকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও চাখতে এবং গিলতে হয়েছে। কিন্তু এই শেকড়টায় এক কামড় দিয়ে মনে হল মাথাটা বোঁ বোঁ করে ঘুরছে।ব্রহ্মতালু পর্যন্ত জ্বলে যাচ্ছে। মুখের ভেতরে আর গলায় কে যেন বেলচা করে এক খাবলা জ্বলন্ত তিতকুটে কয়লা ঢেলে দিয়েছে। ভাগ্যিস চিবিয়ে টিবিয়ে ফেলে নি। তাহলে তো হয়েই গিয়েছিলো। সামনের পুকুর থেকে ঢক ঢক করে আঁজলা ভরে জল পান করে যখন থামল, পেটে এক ফোঁটাও জায়গা অবশিষ্ট নেই। ঝিমিয়ে বসে রইলো অনেকক্ষণ। তারপর উঠে হাঁটতে গিয়েই মনে হল ক্লান্তিটা অনেক কম লাগছে আর মাথাটাও বেশ চনমনে ঠেকছে। কেমন যেন কিছু একটা করতে, লাফাতে, দৌড়তে ইচ্ছে করছে। সে ঠিক করল বাড়ি পৌঁছেই দাশুটাকেও শেকড়টা এক কামড় খাইয়ে দুজনে মিলে একদফা দৌড়তে বেরবে। শুরুটা অবলাকান্ত তক্ষুনি করেই ফেলল। ছুটতে শুরু করল দুলকি চালে।
পরের পর্ব পঞ্চম পর্ব
এত রহস্যের কিনারা করতে অবলাকান্তের মাথার সব চুল পড়ে না যায়।
ভাল এগোচ্ছে, চালিয়ে যাও। ভাল কথা, আগের পর্ব দেওয়ার কায়দাটা বুঝতে না পারলে বোলো, বুঝিয়ে দেব।
বুঝি নি সত্যি।
১।তৃতীয় পর্বের পোস্টটায় যাও।
২।পোস্টের নামের নিচে দেখ এডিট আছে। ওখানে ক্লিক করে এডিটর খোলো।
৩|এডিটরে দেখতে পাচ্ছ একদম শুরুতেই হাইপারলিঙ্কগুলো আছে?
৪|এবার এডিটরের ডানদিকের উপরের কোণে দেখ দুটো অপশন রয়েছে – "দৃশ্যমান" আর "এইচটিএমএল"। "এইচটিএমএল" এর ওপর ক্লিক কর। তাহলে তোমার পুরো পোস্টটার এইচটিএমএল কোডটা দেখতে পাবে। শুরুতেই দেখতে পাবে রয়েছে এরকম একটা জিনিস -
<span style="color: rgb(128, 0, 0);">আগের পর্ব</span> <a href="http://chorjapod.com/#/%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0/ " target="_blank"> প্রথম পর্ব</a> <a href="http://chorjapod.com/%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80/ " target="_blank"> দ্বিতীয় পর্ব</a>
এটা লক্ষ কর ভাল করে। প্রথম অংশটায় জাস্ট লালরং-এ "আগের পর্ব" কথাটা লেখা রয়েছে। এরপর যেখান থেকে <a href লেখা রয়েছে সেই জায়গাটাই আসল। href= বলে কোটস এর মধ্যে যে লিঙ্কটা আছে ওটাই হল টার্গেট লিঙ্ক, অর্থাৎ তোমার আগের পর্বের লেখাটার লিঙ্ক। target="_blank" মানে ক্লিক করলে নতুন ট্যাবে খুলবে। আর তারপর দেখ "প্রথম পর্ব" কথাটা লেখা রয়েছে। তার মানে পোস্টটা করার পর দেখা যাবে ওই "প্রথম পর্ব" কথাটা, এবং তার ওপর ক্লিক করলেই নতুন ট্যাবে তোমার আগের লেখাটা খুলে যাবে। একই রকমভাবে তারপর দ্বিতীয় পর্বেরটা দেওয়া আছে আরেকটা হাইপারলিঙ্ক করে।
এই পোস্টে তোমায় যেটা কঅরতে হবে সেটা হল উপরের জিনিসটা হুবহু কপি পেস্ট করে তুলে দিতে হবে এই পোস্টের এইচটিএমএল কোডের মধ্যে। তারপর এর সাথে জুড়ে দিতে হবে
<a href="…" target="_blank"> তৃতীয় পর্ব</a>
কেবল … এর জায়গায় তোমার তৃতীয় পর্বের লিঙ্কটা কপি পেস্ট করে দিতে হবে। এবার ট্রাই করে দেখ।
পুরো কাজটা করে দিতে আমার কম খাটুনি হত এতটা লেখার চেয়ে, কিন্তু তোমায় শেখানোর জন্য লিখলাম। আশা করি বুঝতে পারবে এবার।
খুব সুন্দর এগোচ্ছে। খুবই ভাল। আপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বগুলোর।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ অনি। রোজ খানিক করে দিচ্ছি। দেখো একবার করে।